লিখেছেন: ড্যানি লিভারস ।। অনুবাদ: রুদ্র আরিফ
স্পিরিটবক্স-এর ভোকাল কোর্টনি লাপ্লান্টের যখন ১৫ বছর বয়স, নিজের জন্মশহর যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালাবামার রক্ষণশীল ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ থেকে তিনি কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়া অঞ্চলের ৬০ মাইল পশ্চিমে, ভ্যানকুভার দ্বীপে চলে আসেন। এই আবাস-বদল ছিল তিন বছর আগে বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যাওয়ার পর জীবনকে নতুনভাবে শুরু করার উদ্দেশ্যে; অল্পবয়সী, ক্ষুব্ধ কিশোরী কোর্টনি এ ব্যাপারে পারতপক্ষে মুখ খোলেননি।
নিজের নতুন বাড়ির জানালা দিয়ে তিনি অপলক ফেরি চলাচল দেখে সময় কাটাতেন; আর দৃশ্যত অশেষ ও শীতল মহাসমুদ্র তার মনে পাহাড়সম ক্রোধ জমাত। “‘আমার এই ফালতু জীবনের এখন কী হবে?’, মনে পড়ে, ভাবতাম এমন”– স্মৃতিচারণায় বলেন তিনি। “আমার আঙ্কেলকে বলে দিয়েছিলাম, ‘যেই মুহূর্তে বয়স ১৮ হবে, সেই মুহূর্তেই অ্যালবামায় ফিরে আসব।’ তিনি বলেছিলেন, ‘বাজি ধরে বলতে পারি, এক মাসের মধ্যেই তুমি এই ভাবনা পাল্টে ফেলবে।'”
…
কোর্টনি এ মুহূর্তে দুনিয়ার সবচেয়ে
রোমাঞ্চকর হেভি মিউজিকের
দূত, পোস্ট-মেটালকোর
ট্রায়ো স্পিরিটবক্স-এর
একজন ভবিষ্যৎ
সুপারস্টার
…
ঠিকই বলেছিলেন তার ওই আঙ্কেল। অতীতের দিকে ফিরে তাকিয়ে কোর্টনি এখন বুঝতে পারেন, আজকের দিনে তার যে অবস্থান, তিনি যে একজন আকর্ষণীয় ও ব্যক্তিত্বপূর্ণ ফ্রন্টপারসনে পরিণত হয়েছেন– এই রূপান্তরে সেই আবাস-বদল ছিল একটি অনিবার্য সূচনাবিন্দু। ‘মেটাল হ্যামার’-এর সঙ্গে জুমে কথা বলার সময় বারবার তার ভ্যানকুভার দ্বীপের দিনগুলো মনে পড়ছিল– ১৭ বছর আগে যে আবাস ছেড়ে যাওয়ার নিয়েছিলেন শপথ। পার্থক্য শুধু: কোর্টনি এ মুহূর্তে দুনিয়ার সবচেয়ে রোমাঞ্চকর হেভি মিউজিকের দূত, পোস্ট-মেটালকোর ট্রায়ো স্পিরিটবক্স-এর একজন ভবিষ্যৎ সুপারস্টার; এবং ব্যান্ডটি সদ্যই মুক্তি দিয়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সবচেয়ে আলোচিত অভিষেক অ্যালবাম ইটারনাল ব্লু।

‘ভিন্ন একটা দেশে চলে আসাটা তখন আমার জীবনের জন্য ছিল খুবই বিষাদের সময়; তবে ব্যক্তি হিসেবে আমি কে, নিজের সেই পরিচয় পুনঃসৃষ্টি করতেও এটি আমাকে একটি সুযোগ দিয়েছে,’ আঙুলে নিজের দীর্ঘ ও পাকানো চুল নিয়ে খেলা করতে করতে স্মৃতিচারণা করেন তিনি। ‘এখানে আসার পর বুঝতে পেরেছিলাম, আমার সত্যিকার অগ্রাধিকার দেওয়ার জিনিস কোনগুলো; এখানে আসার আগে যেগুলোকে ভেবে নিয়েছিলাম, সেগুলোর চেয়ে এ ছিল একেবারেই আলাদা। সে সময়ে আমি ছিলাম এক মেয়ের সঙ্গে দলবেঁধে চলতে ভালোবাসা এক বালিকা। সবকিছু আমার জন্য নিখুঁত হওয়া লাগতই। যখন আমার ১২ বছর বয়স, তখনই বের করার চেষ্টা চালিয়েছিলাম, ১৮ বছর বয়সে পৌঁছানোর পর কীভাবে রানির বেশে বাড়ি ফিরব। এরপর এখানে এসে যে শিশুদের সঙ্গে মিশতাম, তাদের একেকটা আলাদা আত্মপরিচয় ছিল। তারা ছিল নিজ মর্জিমতো চলার মানুষ; সমাজ তাদের কী শেখাল, সেসব নিয়ে ভাবত না।”
রানির মতো বাড়ি ফেরা আর হয়নি কোর্টনির। বরং ১৮ বছর বয়সে তিনি সিদ্ধান্ত নেন মিউজিককে পেশা হিসেবে নেওয়ার। “আমার কোনো ‘প্ল্যান-বি’ ছিল না,” মুচকি হেসে বলেন তিনি। সেটার দরকারও কখনো পড়েনি তার। পরের বছর নিজের প্রেমিক ও বর্তমানে স্বামী, মিউজিকের দিক থেকে আত্মাসঙ্গী এবং স্পিরিটবক্স গিটারিস্ট মাইকেল স্ট্রিঞ্জারের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। ওর সঙ্গেই নিজের অনেকটাই মিথোজীবী সৃজনশীল বন্ধনে জড়িয়ে তিনি।
‘বহু বছরের পুরনো এক পুচকে মিষ্টি বন্ধু ছিল সে আমার; ওকে নিয়ে কোনোদিনই রোমান্টিক কিছু ভাবিনি,’ বলেন কোর্টনি। ‘যখনই ওকে গিটার বাজাতে দেখলাম, মুহূর্তেই ভালো লেগে গেল। মনে হলো, এই ছেলে এখন যে ব্যান্ডে আছে, সেটার বদলে যদি আমার ব্যান্ডে আসতে চায়, কেমন হবে? এই ছেলের সঙ্গেই মিউজিক করা দরকার আমার।’
…
‘আমরা
সত্যি কয়েকটা
বাজে শো করেছিলাম,
তাতে কোনো টাকা আসেনি,
ঘুমোতে হয়েছে
ভ্যানে’
…
আভাঁ-গার্দ মেটাল মব আইরেসলডঅ্যাবিয়ারওয়ানস-এ যোগ দিয়েছিলেন এই যুগল; কিন্তু নিজেদের করা মিউজিক নিয়ে ২০১৫ সালে বেশ ঝামেলা ও বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যান তারা। ‘আমরা সত্যি কয়েকটা বাজে শো করেছিলাম, তাতে কোনো টাকা আসেনি, ঘুমোতে হয়েছে ভ্যানে,’ স্মৃতিচারণায় বলেন কোর্টনি, ‘কারওই সেটা ভালো লাগছিল না।’
এর পরপরই, অল্প কিছু তূর্যনিনাদ শেষে আইরেসলডঅ্যাবিয়ারওয়ানস নীরবে ভেঙে যায়, কোর্টনি ও মাইকেল একটা ব্যান্ড গড়ার কাজে হাত দেন: সেই স্পিরিটবক্সই তাদের এনে দেয় আরাধ্য শব্দ-তারল্য।
কোমলমতি থেকে ব্রুটাল প্রগ্রেসিভ মেটাল, মেটালকোর ও আবেগাত্মকভাবে প্রবল পোস্ট-মেটালে পরিণত হয়ে তারা এমন একটি সতেজ, মিশ্র-জনরার সাউন্ড তৈরি করেছেন, যেটি দর্শক-শ্রোতার কাছে রাসবেরি চিবুতে চিবুতে প্রবল প্রণয়াকাঙ্ক্ষার মনোভাব ছাড়িয়ে একটি টেক মেটালের সন্ধান দিয়েছে, যেটি ছড়িয়ে পড়েছে ধারণার সীমানা ছাড়িয়ে, আর হয়ে উঠেছে প্রকৃত ‘হেভি’ মেটাল।

‘ইটারনাল ব্লুর কিছু গান আমার কাছে ঠিক মেটালের মতো লাগে না,’ ব্যান্ডটির ২০২১ সালের দৃশ্যপটের কথা ভেবে ঘোরগ্রস্তের মতো বলেন কোর্টনি। ‘স্বয়ং মিউজিকই আমাকে এতটাই প্রেরণা যোগায়, আপনাকে তাই নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না– আমাদের (ব্যান্ডের) আসলে কোন জনরায় অবস্থান।’
স্পিরিটবক্স তাদের প্রথম সেলফ-টাইটেলড ইপি প্রকাশ করে ২০১৭ সালে। এরপর একগুচ্ছ সিঙ্গেল প্রকাশ করে ব্যান্ডটি, যার মধ্যে রয়েছে– ব্লেসড বি ও রুল অব নাইনস। এগুলো তাদেরকে ছোট্ট, অথচ জাঁদরেল মেটাল ফ্যানদের পরিসরে জায়গা করে দেয়। পরবর্তীকালে ইউটিউবে কোর্টনির অতুলনীয় রেশমি-জালের-মতো-জাদুময় ভোকালের কারণে বেশ সারা ফেলে। তিনি অবশ্য বলেন, ‘এগুলো আমি খুব একটা দেখি না; কেননা, আমি চাই না, ইন্টারনেটে ছড়ানো লোকজনের আগ্রহের কোনো প্রভাব আমার ওপর পড়ুক।’ তবে পরের বছর এর বিস্ফোরণ ঠিকই ঘটে, যখন ব্যান্ডটি তাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল-ট্রিঞ্জড সিঙ্গেল হলি রোলার মুক্তি দেয়।
(আমেরিকান ফিল্মমেকার) অ্যারি অ্যাস্টারের ২০১৯ সালের চলচ্চিত্র মিডসামার-এর ওপর ভিত্তি করে বানানো হয় এ গানের ভৌতিক আবহ ঘেরা মিউজিক ভিডিও। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই ‘অল্প টাকা’য় এটির শুটিং সারে ব্যান্ডটি। আর এর ইউটিউব ভিউ আসলে ইন্টারনেটের লোকজন সম্পর্কে তাদের অবিশ্বাস ভেঙে দেয়: শত থেকে হাজার হয়ে মিলিয়ন ছাড়িয়ে যায় ভিউ।
‘এই মাত্রার আগ্রহের ওপর ভরসা করে এ পর্যায়ে এই অ্যালবাম আমাদের প্রকাশ করা উচিত, আমার এমনটা কখনোই মনে হয়নি,’ স্বীকার করেন কোর্টনি। “লোকেরা বলছিল, ‘লোকে পছন্দ করবে, এমন মিউজিক করার আন্দাজ তোমরা কী করে এমন ঠিকঠাক করতে পেরেছিলে, বলো তো?’ সত্যি কথা হলো, আমাদের ভাগ্যটাই ভালো। আশা করছি, এমন সৌভাগ্য আরও ২০ বছর বহাল থাকবে।”
হলি রোলার-এর পর আরও বেশি নিজস্ব ধরনের ট্র্যাক– ক্যাথার্টিক সার্কেল উইথ মি ও বিধ্বংসী রকমের আবেগ ভরা কনস্টেন্স মুক্তি দেয় ব্যান্ডটি। আর তাতে তাদের বহুর্মুখী সাউন্ডের প্রতিটি দিকই উন্মত্ততার এক ধ্যানমগ্ন রূপে ফুটে ওঠে।
‘এগুলোকে সিঙ্গেল হিসেবে ভাবা হয়নি কখনো, তবে এই রেকর্ডের জন্য গান বেছে নেওয়ার সময় আমাদের বেশ ভুগতে হয়েছে,’ জানান কোর্টনি। ‘যেন সামনে থেকে পেছন পর্যন্ত– সর্বত্র শোনা যায়, এভাবেই লিখেছি আমরা।’ আর এ কারণেই টারনাল ব্লু শুনলে সেই সংবেদনশীল অনুভূতি টের পাবেন, যেটি একেবারেই ‘র’; যেটিকে নিজের কিশোরকাল ইঙ্গিত করে কোর্টনি ‘নিজ নৈরাশ্যের সঙ্গে আমার বোঝাপড়ার’ একটি আবেগাত্মক অভিযাত্রা হিসেবে গণ্য করেছেন।
…
এসব
গানে নিজ
জীবনের সবচেয়ে
অন্ধকারাচ্ছন্ন মুহূর্তগুলোকে
তিনি বারবার খুঁড়ে
গেছেন
…
অ্যালবামটির রেকর্ডিং ছিল ‘শারীরিক ও মানসিকভাবে খুবই ক্লান্তিকর,’ বলেন তিনি; কেননা, এসব গানে নিজ জীবনের সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন মুহূর্তগুলোকে তিনি বারবার খুঁড়ে গেছেন। ‘প্রতিদিনই ঘুম ভাঙলে মনে হতো, আমি যেন আগের দিনের চেয়েও বেশি ক্লান্ত। এ যেন অভিনয়ের মতো ব্যাপার। আপনার আবেগকে কারও নিজের কান দিয়ে শুনতেই হবে; আর সেজন্য যেই ন্যারেটরই গানটি গাইছেন, তার মানসিক অবস্থায় আপনাকে পৌঁছাতে হবে। ন্যারেটর তো মূলত আমি, কিন্তু সেটি আমার জীবনের ভিন্ন কালে। পরিবেশটা নিরাপদ ছিল অবশ্য; আমি ছিলাম ড্যান [প্রডিউসার ড্যান ব্রাউনস্টেইন], বিল [বেজিস্ট বিল ক্রুক] ও মাইকেলের সঙ্গে; এই মানুষগুলো আমাকে ভালোবাসে, এবং কোনোকিছু বিরূপ হলে, এরা আমার সুরক্ষা দেবে।’
সার্কেল উইথ মির রেকর্ডিংকালে তার আবেগের বাধ ভেঙে যায়। ‘রেকর্ড করতে যখন গেলাম, একদমই আত্মবিশ্বাস ছিল না,’ স্মৃতিচারণ করেন তিনি। ‘গলা দিয়ে ঠিকমতো শব্দ বের হচ্ছিল না আমার; তখন ওরা রেকর্ডিং সেশন স্থগিত করতে বাধ্য হয়। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার ভয় পাচ্ছিলাম খুব।’
তারপর আচমকাই তার সেই পুরনো দৃঢ়তা বুদবুদ ছড়ালো। “ওরা বলল, ‘ব্যাপার না কোর্টনি, আমরা কাল আবার চেষ্টা করে দেখব।’ আমি তখন নিজের রুমে ছুটে গিয়ে, আলমারির মধ্যে ঢুকে পড়লাম আর কাঁদতে লাগলাম। পরের দিন জাদুকরি কাণ্ড ঘটে গেল। সে রাতে যদি ব্রেকডাউন না হতো আমার, তাহলে পরের দিন গানটা এভাবে গাইতে পারতাম না।”
ইটারনাল ব্লু প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে এই অ্যালবাম নিয়ে উন্মাদনা ছড়িয়ে পড়ে। অ্যালবামটি শুনলে মনেই হবে না ব্যান্ড হিসেবে স্পিরিটবক্স কতটা নতুন। শুরুর অল্প ক’টি বছরের বেশিরভাগ সময় ধারণার ওপরই সময় কাটিয়েছেন এই ব্যান্ডের সদস্যরা; চেয়েছিলেন, ব্যতিক্রধর্মী মন্থর মিউজিক ভিডিও করতে। মিউজিক্যাল ট্যুর তারা এখনো শুরু করেননি।
‘স্পিরিটবক্স হিসেবে আমি এতদিনে যতগুলো শোতে পারফর্ম করেছি, এই পর্যায়ে তারচেয়েও বেশি শোয়ের প্রস্তাব বাতিল করতে হচ্ছে,’ দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন কোর্টনি, ২০২০ সালে আফটার দ্য বিউরিয়াল ব্যান্ডের সাপোর্টিং হিসেবে এবং তারপর এ বছরের শুরুতে লিম্প বিজকিট-এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে একটি শো করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বাতিল হয়ে যাওয়ার উল্লেখ করে বলেন তিনি। ‘এমন একটা ট্যুরে যাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি, যেটা হবে সম্পূর্ণই আমাদের!’
যদিও প্রত্যাশার চাপ তাদের মধ্যে ঝড় তোলার হুমকি জারি রাখছে, তবু কোর্টনি তাকিয়ে রয়েছেন ঝড়ের দিকে– নিজের পা মাটিতে বেশ শান্তভাবে রেখেই। ‘ওপেনিং ব্যান্ড হওয়ার স্বপ্ন আমি দীর্ঘকাল ধরেই দেখছি,’ বলেন তিনি। ‘ট্যুরে যাওয়ার মতো টিম আমরা এখনো পাইনি; বড় মাত্রার কোনো স্পিরিটবক্স শো করার স্পর্ধা দেখানোর আগে এখনো আমাদের অনেক কিছু শেখার বাকি। আমি জানি, লোকে আমাদের কাছে নিখুঁত পারফরম্যান্স আশা করে; আমিও সেইসব প্রত্যাশা পূরণ করতে চাই। এ নিয়ে আমার কোনো ভয় নেই। এসব বরং আমাকে আরও বেশি প্রেরণা যোগায়।’
ড্যানি লিভারস: মিউজিক ক্রিটিক, ইংল্যান্ড
সূত্র: মেটাল হ্যামার। হেভি মেটাল ও রক মিউজিক ম্যাগাজিন; যুক্তরাজ্য। ২০ অক্টোবর ২০২১

স্পিরিটবক্স
জনরা: হেভি মেটাল
দেশ: কানাডা
সময়কাল: ২০১৬–বর্তমান
সদস্য
কোর্টনি লাপ্লান্ট: ভোকাল [২০১৬–]
মাইকেল স্ট্রিঞ্জার: গিটার [২০১৬–]
বিল ক্রুক: বেস [২০১৮–]
জেভ রোজেনবার্গ: ড্রামস [২০২০–]
প্রাক্তন সদস্য
রায়ান লোর্ক: ড্রামস [২০১৮–২০২০]
স্টুডিও অ্যালবাম
ইটারনাল ব্লু [১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১]