আর্চ এনিমি’র ‘অ্যাজ দ্য পেজেস বার্ন’: নতুন ভোকাল, নতুন বারুদ ও নেপথ্য গল্প

0
66
আর্চ এনিমি

লিখেছেন । ডম লসন
অনুবাদ । রুদ্র আরিফ

দুনিয়ার অন্যতম সুপ্রতিষ্ঠিত প্রিমিয়ার ফেস-রিপিং মেটাল ব্যান্ড আর্চ এনিমি ইতোমধ্যেই একটি বড় ধরনের ব্যক্তিক পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলেছিল অরিজিনাল ফ্রন্টম্যান ইয়োহান লিভার জায়গায় ২০০০ সালে অ্যাঞ্জেলা গসো’কে নিযুক্ত করে, যিনি কালের পরিক্রমায় ব্যান্ডটির আইকনিক ভোকালে পরিণত হয়েছিলেন। তারপর থেকে মিশেল আমোটের সুদক্ষ ক্রুরা হয়ে ওঠেন অপ্রতিরোধ্য; এবং প্রতিনিয়ত বড় বড় কাজে দিতে থাকেন প্রমাণ।

তাই সহজাতভাবে কণ্ঠস্বরে বুনো ক্যারিশম্যাটিক দাপটের অধিকারিণী অ্যাঞ্জেলা গসো যখন ব্যান্ডের ফ্রন্টওম্যানের জায়গা থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন (২০১৪ সালে), আর জানালেন, এখন থেকে আর্চ এনিমির বিহাইন্ড-দ্য-সিনেই দায়িত্ব সামলাবেন, তখন অনুরাগীরা পড়ে গেলেন এক কূট প্রশ্নের গভীর চিন্তায়: তার জায়গায় গান গাইবেন কে তাহলে?

সৌভাগ্যক্রমে ব্যান্ডটির হোমওয়ার্ক সেরে নিজেকে ভালোভাবেই তৈরি করে রেখেছিলেন কেউ একজন; তিনি অ্যালিসা হোয়াইট-গ্লুজ।

‘মনে পড়ে, ওয়েজেস অব সিন [অ্যাঞ্জেলাকে নিয়ে আর্চ এনিমির প্রথম অ্যালবাম] যখন কিনি, তখন আমি কিশোরী, এবং যাত্রা শুরু করব বলে সদ্যই ঢুকে পড়েছিলাম একটি ব্যান্ডে,’ বলেন অ্যালিসা হোয়াইট-গ্লুজ, বর্তমানে আর্চ এনিমির দারুণভাবে প্রতিষ্ঠিত ফিগারহেড ও ভোকালিস্ট। “সেটি ছিল একটি প্রগ-ব্যান্ড, অনেকটাই ড্রিম থিয়েটারধর্মী। নিজের ভোকাল ক্লিন করার, নিজস্ব কণ্ঠস্বর আবিষ্কারের এবং কণ্ঠে যা কিছু করতে চাই– সেসব নিয়ে সব ধরনের চেষ্টাই আমি চালাচ্ছিলাম। আমার ধারণা, সেই ব্যান্ডেরই কেউ একজন বলেছিলেন, ‘গিটারের কারুকাজ যদি পছন্দ করো, তাহলে আর্চ এনিমি মনোযোগ দিয়ে শোনা উচিত তোমার।’ এ কারণেই ওয়েজেস অব সিন কিনেছিলাম; যদিও তখনো এই ব্যান্ড সম্পর্কে আসলেই কিছু জানতাম না।”

আর্চ এনিমি
আর্চ এনিমি; মেলোডিক ডেথ মেটাল ব্যান্ড, সুইডেন। বাঁ থেকে– শার্লি ডি’অ্যাঞ্জেলো [বেস, বেকিং ভোকাল; ১৯৯৮–], মিশেল আমোট [গিটার, ব্যান্ড লিডার, বেকিং ভোকাল; ১৯৯৫–], অ্যালিসা হোয়াইট-গ্লুজ [লিড ভোকাল; ২০১৪–], ড্যানিয়েল এরলান্ডসন [ড্রামস, কীবোর্ডস; ১৯৯৮–], জেফ লুমিস [গিটার, বেকিং ভোকাল; ২০১৪–]

হেভি মেটালের হরদম-নির্বিকার ভুবনে কিছু জিনিস যেন তারায় লেখা থাকে! মিউজিশিয়ান হয়ে ওঠার জীবনে ইতোমধ্যে পা বাড়ানো অ্যালিসা আর্চ এনিমি শোনামাত্রই, মুহূর্তেই একটি কর্ডে বিহ্বল পড়েন; সেটি যতই শুনতে থাকেন, ততবারই নতুন করে, আরও আবিষ্কার করতে থাকেন এই ব্যান্ডের অনেক কিছু: যেমন, আর্চ এনিমির বুনো কণ্ঠস্বরটি আসলে একজন নারীর!

‘এ ধরনের ভোকাল আমি নিশ্চয়ই আগেও শুনেছি; তবে মনে পড়ে, মিউজিক স্টোর থেকে বের হয়ে নিজের ডিস্কম্যানে সিডিটি ছাড়ার পর এ কণ্ঠই শুনতে চাচ্ছিলাম,’ স্মৃতিচারণায় বলেন তিনি। “তখন আমি বাসে করে বাড়ি ফিরছিলাম। বাসে বসেই উল্টাচ্ছিলাম বুকলেটটা, আর সেখানে দেখলাম অ্যাঞ্জেলার ছবি। দেখেই ভাবলাম, ‘আরে, আরে! এক সেকেন্ড…!’ হা-হা! এমনতর ভয়েস শোনা ও এমনতর চেহোরা দেখতে পাওয়া আমার জন্য ছিল ভীষণ অনুপ্রেরণামূলক ঘটনা। একজন কিশোরী হিসেবে ভীষণ রোমাঞ্চিত হয়ে ওঠলাম, আর ভাবতে থাকলাম– আমার পক্ষেও বোধহয় এমন কিছু করা সম্ভব।”


সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় ও দাপুটে
নারী ভোকালিস্টদের
একজন
হিসেবে
তার
খ্যাতি দিনে দিনে বেড়েছে

মোটামুটি এক দশক পরে, কানাডিয়ান মেটালকোর মব দ্য অ্যাগোনিস্ট-এর ফ্রন্টওম্যান ও আমেরিকান পাওয়ার মেটাল লিজেন্ডস ক্যামেলট-এর লাইভ ভোকালিস্ট হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করে নিজ স্বপ্নপূরণের পথে ভালোভাবেই এগিয়ে গেছেন অ্যালিসা। সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় ও দাপুটে নারী ভোকালিস্টদের একজন হিসেবে তার খ্যাতি দিনে দিনে বেড়েছে; আর এর ফলে অ্যাঞ্জেলা গসোর যথাযোগ্য স্থলাভিষিক্ত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন তিনি। অবশ্য তাদের দুজনের মধ্যে ইতোমধ্যেই গড়ে উঠেছিল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক।

একদিন সবকিছু যখন ঠিকঠাক চলছিল, আচমকাই চমকে যান অ্যালিসা।

“শুনতে আজব লাগলেও সবকিছু তুলনামূলক স্বাভাবিকই ছিল। তবে ইতোমধ্যেই অ্যাঞ্জেলার সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল আমার, আর আমরা সারাক্ষণই পরস্পরের সঙ্গে কথা বলতাম,’ বলেন অ্যালিসা। ‘মিশেল-সহ ব্যান্ডের বাকি সবার সঙ্গে আগেই দেখা হয়েছিল আমার, যদিও তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখিনি আসলে। তখন আমি ক্যামেলট-এর সঙ্গে একটা ট্যুরে; আমরা তখন দক্ষিণ কোরিয়ায়, এমন সময় অ্যাঞ্জেলার একটা ই-মেইল পেলাম: ‘তুমি কি যতদ্রুতসম্ভব মিশেলের সঙ্গে ফোনে একটু কথা বলতে পারবে?’

যথারীতি মিশেল আমোটের সঙ্গে কথা বললেন অ্যালিসা; এবং সুইডিশ ওই গিটারিস্টের সঙ্গে আলাপের ১০ সেকেন্ডের মধ্যেই বুঝে গেলেন, আর্চ এনিমির নতুন ভোকাল হিসেবে ব্যান্ডটি তাকে মরিয়াভাবে চায়; আর তাতে অ্যাঞ্জেলার পূর্ণ সমর্থনের পাশাপাশি দারুণ এক বাড়তি পাওনা হিসেবে রয়েছে অনুমোদনও।


বন্ধুরা
ও পরিবারের
লোকজন সবসময়ই
রসিকতা করে বলত, ‘টুয়েন্টি
সেভেন ক্লাবে যোগ দিও
না প্লিজ! যদিও বয়স
তোমার ২৭
এখন!’

‘২০১৩ সালের সেই মুহূর্তটি ছিল উদ্ভট; কেননা, আমার তখন ২৭ বছর বয়স,’ বলেন অ্যালিসা। “আমার বন্ধুরা ও পরিবারের লোকজন সবসময়ই রসিকতা করে বলত, ‘টুয়েন্টি সেভেন ক্লাবে যোগ দিও না প্লিজ! যদিও বয়স তোমার ২৭ এখন!’ এরপর এক মাসের মধ্যে ডোয়েলের [আমেরিকান দাপুটে পাংক রক ব্যান্ড মিসফিটস-এর লিড গিটারিস্ট এবং অ্যালিসার পার্টনার ডোয়েল উল্ফগাং ভন ফ্রাঙ্কেনস্টাইন] সঙ্গে পরিচয় হয় আমার। একইসঙ্গে আর্চ এনিমি থেকে ডাক পেলাম, বয়স আমার ২৮ হওয়ার আগেই। ফলে ব্যাপারটাকে উদ্ভট লাগছিল: ‘আচ্ছা! তার মানে এটাই আমার জীবনের সেরা বছর!’ যেন মহাজাগতিক কোনো ঘটনা ঘটে গেছে আমার জীবনে, এমনটাই লাগছিল নিজের কাছে।”

অ্যালিসা যে আর্চ এনিমির সদস্য হবেন, তার সেই নিয়তির আরেকটি ইঙ্গিত হলো– মিশেলের সঙ্গে খুব দ্রুতই ব্যান্ডের গান লেখার পার্টনারশিপ গড়ে তোলার কাজটি সাফল্যের সঙ্গে অতি দ্রুততায় অর্জন করে নিয়েছিলেন তিনি। মিশেলের নিরলসভাবে বিস্ফোরকধর্মী ট্রেডমার্ক সাউন্ডের সঙ্গে মানানসই করে গানের কথা লেখার কাজে, আর্চ এনিমির একজন ভক্ত হিসেবে ব্যান্ডটিতে যোগ দেওয়ার পর অ্যালিসা বেশ আনন্দের সঙ্গেই রসাস্বাদন করেছিলেন।

অ্যালিসা হোয়াইট-গ্লুজ

“আরে, এ ছিল এক দারুণ ব্যাপার। মিউজিকের দিক থেকে আর্চ এনিমির সবগুলো ক্যাটালগই জানা ছিল আমার; ফলে এ ধরনের লেখার সঙ্গে ইতোমধ্যেই এক ধরনের পরিচিত ছিলাম। তখনো কণ্ঠ না দেওয়া ওয়ার ইটারনাল অ্যালবামের গানগুলো মিশেল যখন আমাকে দেখাল, সহসাই মনে হলো, শুনতে দারুণ লাগবে; আর ততক্ষণেই এর তেজ বুঝে গিয়েছিলাম। ‘আসলে ওই অংশটা ভালো লাগছে না, একটু ঠিকঠাক করে নেওয়া দরকার…’– এ রকম কিছুই মনে হয়নি। স্রেফ মনে হয়েছে, ‘আরে, এটা তো দারুণ! এই মিউজিকের ওপর আমি অবশ্যই গানের কথা বসাতে চাই!’”


অতীতের
লটবহর
বাতিল
করে
দিয়ে
নতুন দিনের পানে আত্মবিশ্বাসী
পদক্ষেপের ওপর একটি
অনুপ্রেরণামূলক
অ্যানথেম বা
বন্দনাগীতি
হয়ে উঠেছে এটি

এমনতর জীবন পাল্টে দেওয়ার মতো ঘটনার অভিজ্ঞতা পেয়ে, আর্চ এনিমির হয়ে নিজের প্রথম অ্যালবাম ওয়ার ইটারনাল-এ গান লেখাকালে অ্যালিসার মনে যে দার্শনিক মেজাজ ভর করেছিল, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বর্তমানে ব্যান্ডটির লাইভ শো’তে দৃশ্যতই স্থায়ীভাবে লিস্টে থাকা অ্যাজ দ্য পেজেস বার্ন সেই গানগুলোর মধ্যে লিরিকের দিক থেকে সবচেয়ে ধারাল: অতীতের লটবহর বাতিল করে দিয়ে নতুন দিনের পানে আত্মবিশ্বাসী পদক্ষেপের ওপর একটি অনুপ্রেরণামূলক অ্যানথেম বা বন্দনাগীতি হয়ে উঠেছে এটি।

‘ব্যাপারটি এমন– আপনার জীবনের প্রতিটি দিনকে যদি আপনার বইয়ের একেকটি পৃষ্ঠা হিসেবে ধরে নেন, তাহলে অতীতকে পুড়িয়ে ফেলে নিজেকে হালকা করে তোলা সম্ভব,’ ব্যাখ্যা করেন অ্যালিসা। “বর্তমানে পা থাকলেও ভবিষ্যতের দিকে তাকানোর আইডিয়াটি আমার পছন্দের। কোনোকিছুই পাথরে লিখিত নয়; সবকিছুই পুড়ে ও পাল্টে যেতে পারে। একদিক থেকে ২৭ বছর বয়সে এ ভাবনা ধরা দিয়েছিল, ‘আমি কি এ বছরই মারা যাব?’ কেননা, ২৭ বছর বয়সে লোকেরা এমনই ভাবে; তাই না? কিন্তু আসলে তা নয়। বরং পুনর্জন্ম হচ্ছিল আমার। নিজের জীবনের ভালোবাসার মানুষটির দেখা পেয়েছিলাম তখন, আর যোগ দিয়েছিলাম এমন এক ব্যান্ডে– যার ফলে আগের অভিজ্ঞতার একেবারেই বিপরীত হয়ে উঠেছিল সবকিছু। গতকাল আমি যে মানুষ ছিলাম, আজও আমার সেই মানুষ হয়ে থাকার তো কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।’

আর্চ এনিমি
ওয়ার ইটারনাল। স্টুডিও অ্যালবাম, আর্চ এনিমি

রূপান্তরগুলো যখন ঘটছিল, আর্চ এনিমিকে অ্যালিসা হোয়াইট-গ্লুজের আত্মীকরণ ততই একীভূত ও ফুরফুরে হয়ে উঠেছিল। লক্ষণীয়ভাবে, ওয়ার এটারনাল-এর প্রতি শ্রোতার প্রতিক্রিয়া বিশ্বব্যাপীই ছিল অনেকটাই ইতিবাচক; ব্যান্ডের এই নতুন ফ্রন্টওম্যান নতুন গানগুলোতে তার চিরগতিশীল ও স্বতন্ত্র অবদানের জন্য ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিলেন।

‘আমি ছিলাম রোমাঞ্চিত। ভক্তদের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে খুব একটা আন্দাজ করতে পারিনি; কেননা, (বেজিস্ট) শার্লি (ডি’অ্যাঞ্জেলো), মিশেল, (ড্রামার) ড্যানিয়েল (এরলান্ডসন), অ্যাঞ্জেলা ও (বর্তমানে প্রাক্তন গিটারিস্ট) নিক (কার্ডল) আমাকে ভীষণ আপন করে নিয়েছিল। একটা অসাধারণ অ্যালবামে অসাধারণ ভোকাল ডেলিভারি দিতে পেরেছি– সেই আত্মবিশ্বাসও অনুভব করেছিলাম আমি। তাছাড়া, আমি যেহেতু আগে থেকেই আর্চ এনিমির ফ্যান ছিলাম, আর জানতাম, এটি আর্চ এনিমির একটি দারুণ অ্যালবাম হতে যাচ্ছে, তাই নিজেও খুশিমনে অ্যালবামটি কিনে আমার ডিস্কম্যানে বাজিয়ে শুনেছি… হা-হা-হা!’

নতুন এই ম্যাটেরিয়াল মুহূর্তেই সবাইকে ছুঁয়ে গিয়েছিল; ফলে দর্শক-শ্রোতার সামনে দাপুটে লাইনআপ নিয়েই দাঁড়াতে পেরেছে আর্চ এনিমি। স্থির ও সাধারণজ্ঞানের উদ্ধত স্তরগুলো সহকারে গায়িকা পরিবর্তন শেষের অভিযাত্রায় অ্যালিসা ও তার নতুন ব্যান্ডমেটদের জন্য রোড ট্যুরে সম্ভবত খুব সামান্য বিপত্তিও নিয়তিতে ছিল। আসলে, কোনো পথই তো কখনোই ‘অতটা’ মসৃণ নয়!


প্রথম কিংবা দ্বিতীয় গানটির
পর আমি দর্শকদের
সঙ্গে কথা বলতে
শুরু করে
দিয়েছিলাম;
তারা আমার নামজপ
করতে শুরু করে দিয়েছিলেন

“হ্যাঁ, প্রথমদিকের শোগুলোতে উন্মত্ত পরিস্থিতির মধ্যে নিজেদের খুঁজে পেয়েছি আমরা। বাসের গোলমালের কারণে প্রথম শোতে পৌঁছতেও দেরি হয়েছিল আমাদের। তাছাড়া দ্বিতীয় শোতে অনস্টেজে পড়ে গিয়ে আমার পাঁজর ভেঙে গিয়েছিল। ফলে এক উন্মত্ত অগ্নিপরীক্ষা ছিল সেটি, যা কি না অ্যাজ দ্য পেজেস বার্ন-এর জন্য যথার্থ বলেই মনে হয় আমার; তবু শোগুলো দারুণ ছিল। প্রথম শোটি আমার পুরোদস্তুর মনে আছে। প্রথম কিংবা দ্বিতীয় গানটির পর আমি দর্শকদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করে দিয়েছিলাম; তারা আমার নামজপ করতে শুরু করে দিয়েছিলেন! সেই মুহূর্তে আমাদের সবারই মনে হয়েছে, ‘হ্যাঁ, কাজ হবে!’ সত্যিই এক দারুণ অনুভূতি ছিল সেটি।”

ওয়ার ইটারনাল মুক্তির পর কেটে গেছে ৭ বছর; এখন আর্চ এনিমির গায়িকা হিসেবে অ্যালিসা ছাড়া অন্য কারও কথা ভাবাও মুশকিল। ওয়ার ইটারনাল-এর পর আর্চ এনিমির অ্যালবাম উইল টু পাওয়ার মুক্তি পায় ২০১৭ সালে। এই অ্যালবামে ব্যান্ডটির বিশিষ্ট ক্যাটালগে আরও অনেক বেশি রাগি অ্যানথেম যুক্ত হয়েছে; আর লাইভ কনসার্টে সবচেয়ে দুর্ধর্ষ মেটাল ব্যান্ডগুলোর একটি হিসেবে তাদের সুনাম রয়ে গেছে অনতিক্রম্য। স্পষ্টতই, এর সবই লেখা ছিল নক্ষত্রের বুকে!

অ্যাজ দ্য পেজেস বার্ন। অফিসিয়াল লিরিক ভিডিও

ঠিক যেমনটা অ্যাজ দ্য পেজেস বার্ন গানে গেয়েছেন অ্যালিসা: ‘দ্বিতীয় সুযোগে নিহিত থাকে প্রত্যাশা/ যে বই লিখেছ তুমি– নেই তার অস্তিত্ব কোনো/ ভবিষ্যৎ নিহিত তোমার কলমে/ কালি থেকে কাগজে, এখন শুরু…’ [“অ্যা সেকেন্ড চান্স ক্যারিস এক্সপেকটেশন/ দ্য বুকস ইউ’ড রিটেন নো লংগার এক্সিস্ট/ দ্য ফিউচার ইজ ইন ইউর পেন/ ইঙ্ক টু পেপার, নাউ বিগিন…”]।

‘কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজের (লেখা) গানের সঙ্গে আমি খুব একটা সম্পৃক্ততা অনুভব করি না– এ যেন ঠিক অ্যাঞ্জেলা কিংবা মিশেলের বিপরীত (অনুভূতি),’ উপসংহার টানেন অ্যালিসা। ‘যখনই দর্শক-শ্রোতাও আমার সঙ্গে গাইতে শুরু করেন, তখন অনুভূতিটা পাই। আমরা সবাই মিলে একটা টিম; আর অন্য সদস্যদের (লেখা) গান গাইতে আমার আনন্দ লাগে। কখনো কখনো আমি অ্যাঞ্জেলার গানও গাই; আর তাকিয়ে ঠিক দেখতে পাই, অ্যাঞ্জেলাও আমাদের পেছনে দাঁড়িয়ে গাইছে! তবে অ্যাজ দ্য পেজেস বার্ন একটা বড় ঘটনা। (লাইভে) গানের তালিকায় এটি থাকেই; আমরা প্রত্যেক শোতেই এই ট্র্যাক পারফর্ম করি। নিজের লেখা গান, নিজের করা মিউজিক প্রশংসা পাচ্ছে– এ এক দারুণ রোমাঞ্চকর ব্যাপার।’


ডম লসন: মিউজিক জার্নালিস্ট; ইংল্যান্ড
সূত্র: মেটাল হ্যামার; হেভি মেটাল ও রক মিউজিক ম্যাগাজিন, যুক্তরাজ্য। ২৫ আগস্ট ২০২১
Print Friendly, PDF & Email
সম্পাদক: লালগান । ঢাকা, বাংলাদেশ।। মিউজিকের বই [অনুবাদ]: আমার জন লেনন [মূল: সিনথিয়া লেনন]; আমার বব মার্লি [মূল: রিটা মার্লি] ।। কবিতার বই: ওপেন এয়ার কনসার্টের কবিতা; র‍্যাম্পমডেলের বাথটাবে অন্ধ কচ্ছপ; হাড়ের গ্যারেজ; মেনিকিনের লাল ইতিহাস ।। সিনেমার বই [সম্পাদনা/অনুবাদ]: ফিল্মমেকারের ভাষা [৪ খণ্ড: ইরান, লাতিন, আফ্রিকা, কোরিয়া]; ফ্রাঁসোয়া ত্রুফো : প্রেম ও দেহগ্রস্ত ফিল্মমেকার; তারকোভস্কির ডায়েরি; স্মৃতির তারকোভস্কি; হিচকক-ত্রুফো কথোপকথন; কুরোসাওয়ার আত্মজীবনী; আন্তোনিওনির সিনে-জগত; কিয়ারোস্তামির সিনে-রাস্তা; সিনেঅলা [৩ খণ্ড]; বার্গম্যান/বারিমন; ডেভিড লিঞ্চের নোটবুক; ফেদেরিকো ফেল্লিনি; সাক্ষাৎ ফিল্মমেকার ফেদেরিকো ফেল্লিনি; সাক্ষাৎ ফিল্মমেকার ক্রিস্তফ কিয়েস্লোফস্কি; সাক্ষাৎ ফিল্মমেকার চান্তাল আকেরমান; বেলা তার; ক্রিস্তফ কিয়েস্লোফস্কি; সাক্ষাৎ ফিল্মমেকার বেলা তার; সাক্ষাৎ ফিল্মমেকার নুরি বিলগে জিলান